একদিন বন্ধুর আহবানে; বন্ধুত্বের জয়গানে

“হঠাৎ রাস্তায় অফিস অঞ্চলে
হারিয়ে যাওয়া মুখ চমকে দিয়ে বলে
বন্ধু কি খবর বল?
কত দিন দেখা হয়নি”

বন্ধুদের সাথে দেখা করার এই আকূলতা সব মানুষের। বন্ধুত্ব মানে বন্ধুত্বই। এটি এমন এক শব্দ, যার কোনো সংজ্ঞা দরকার হয় না। ভালো-খারাপ সব মিলিয়েই যাকে ভালোবাসা যায় সেই তো বন্ধু। যদিও নাগরিক জীবনে সবাই ব্যস্ত নিজস্ব জীবন নিয়ে! কিন্তু জীবন মানেই ভালোবাসার সুযোগ। আর ভালোবাসার সবটা জুড়ে থাকে বন্ধুর দল। বন্ধু মানেই স্কুল পালানো এক দল দুরন্ত কিশোর কিশোরী। পথ চলতে চলতে মানুষের জীবন অনেকের সাথেই বন্ধুত্ব হয়! কিন্তু স্কুল কলেজের বন্ধুদের সাথে তার তুলনা চলে না। স্কুল কলেজের বন্ধু মানেই দলাদলির দিন গলাগলির দিন হঠাৎ অকারনে হেসে ওঠার দিন। হেলেন কেলারের ভাষায় বলতে হয়, অন্ধকারে একজন বন্ধুর সঙ্গে হাঁটা আলোতে একা হাঁটার চেয়ে ভালো।

তাই বন্ধুত্বের অমলিন স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে এস এস সি ৯৭ ও এইচ এস সি ৯৯ ব্যাচ আয়োজন করে বন্ধুদের নিয়ে বনভোজন। গত ১ মার্চ এস এস সি ৯৭ ও এইচ এস সি ৯৯ এর বন্ধুদের আড্ডায়, হাসি, আনন্দে মুখরিত হয়ে উঠে সাভারের হেমায়েতপুরের লাজ পল্লী। সারা দেশ থেকে এস এস সি ৯৭ ও এইচ এস সি ৯৯ ব্যাচের প্রায় ১০০০ প্রাক্তন ছাত্র -ছাত্রী অংশ গ্রহণ করে এই প্রাণের মেলায়। প্রায় দুই যুগ পরে সব স্কুলের কলেজের বন্ধুরা একত্রিত হয়ে ফিরে যায় দুরন্ত কৈশোরে। প্রথমে কুশল বিনিময়ের মাধ্যমে শুরু হয় এই প্রাণের মেলা। তারপর জাতীয় সংগীত এবং না ফেরার দেশে চলে যাওয়া বন্ধুদের উদ্দেশ্যে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং কেক কেটে করা হয় বন্ধুত্ব উৎদযাপন! পূনর্মিলন অনুষ্ঠানের শেষে ছিলো মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মেজবাহ এবং শারমিনের এর উপস্থাপনায় শুরুতেই বিটুল ও তার দলের নাচ সবাইকে মুগ্ধ করে, এর পর একের পর এক সংগীত পরিবেশন করেন মনিকা রাউত, শারমিন জু্‌ই, হুমায়রা জেনি, আহমেদ ফয়সাল, ডিকেনের গানের সাথে নেচে গেয়ে তাল মেলায় সব বন্ধুরা। ডিকেনের অসাধারণ পরিবেশনার মধ্যে দিয়ে শেষ হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

বন্ধুত্ব নিয়ে এস এস সি ৯৭ ও এইচ এস সি ৯৯ এর শিক্ষার্থী সাব্বির ফেরদৌস রাতুল বলেন, “বন্ধুত্বের টানে বন্ধুর পথকে উপেক্ষা করে তোমরা এসেছিলে। জানি, আজীবন এভাবেই আসবে, পাশে থাকবে, দৃঢ় হবে বন্ধন। যারা আসতে পারোনি, দুঃখ করোনা। কোনো এক মাহেন্দ্রক্ষণে এ আবার দেখা হবে। সেইদিন পর্যন্ত ভালো থেকো সবাই, এগিয়ে যাও দূর্বার”

এস এস সি ৯৭ ও এইচ এস সি ৯৯ এর আরেক শিক্ষার্থী আবুল হাসনাত বলেন, “ইদানীং কালের কৃত্রিম সব মানুষের মাঝে প্রান ফিরে পাওয়া সময়গুলো বারবার ফিরে আসুক নিস্বার্থ বন্ধুত্ব নিয়ে আর সবাইকে বুঝিয়ে দিক, একেই বন্ধুত্ব বলে। খুব সুন্দর একটা দিন কাটিয়েছি আমরা, অল্প কজন কেই চিনতাম আমি। তারপরেও সবাইকে আপন মনে হয়েছে, সবাই ব্যাচমেট বন্ধু। সবসময় মনে হতো এমন করে কি আদৌ আমাদের এক সাথে হওয়া সম্ভব কিনা? সবার এতো প্রাণবন্ত উপস্থিতি প্রোগ্রাম কে স্বার্থক করেছে”

বনভোজন শেষে সবাই যখন ঘরে ফিরে সাথে নিয়ে ফিরে বেঁচে থাকার জন্য একরাশ সুখ স্মৃতি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *